মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার ১০ টি সহজ টিপস

    আপনি কি একই ডাটা সমৃদ্ধ দুটি এক্সেল শিটকে মার্জ করতে চান? নাকি সাধারণ ম্যাথমেটিক্যাল টার্ম এখানে হিসাব করতে চান? নাকি আবার একাধিক সেলে আপনার তথ্য সাজাতে চান? এরকম গুরুত্বপূর্ণ কাজকে সহজ করতে মাইক্রোসফট এক্সেল খুব কার্যকরী একটি অফিস স্যুট। ডাটা এন্ট্রি থেকে শুরু করে বিজনেস ডাটা কালেকশন, ভেরিফিকেশন, এনালাইসিস, বাজেটিং, রিপোর্টিং এবং একাউন্ট ম্যানেজমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ মাইক্রোসফট এক্সেল করতে পারে। 


    সুতরাং আপনি যদি শুধুমাত্র মাইক্রোসফট এক্সেল শিখতে পারেন তাহলে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করার বড় সুযোগ পাবেন। বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র এক্সেলে হিসাব নিকাশ করার জন্য রিমোট এমপ্লয়ি হায়ার করেন প্রতিনিয়ত। আমাদের মতো অধিক বেকারত্বের দেশে এক্সেল শিখে একটি স্মার্ট এমাউন্ট ইনকাম করতে পারেন, তাও আবার ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানীতে বহু ধরণের কাজের সুযোগ তো থাকছেই। 


    মাইক্রোসফট এক্সেল শেখা কি কঠিন? 


    মাইক্রোসফট এক্সেলের বেসিক কমান্ড বা ফর্মুলা শেখা বেশ সহজ প্রক্রিয়া। যদিও আপনি মিডিয়াম থেকে এডভান্স লেভেলে যেতে হলে একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের সহায়তা নিলে বেশ দ্রুত আয়ত্ত্ব করতে পারবেন। আপনার ধৈর্য এবং অধ্যবসায় অনুসারে এক্সেলে মোটামুটি কাজের যোগ্য হতে এক মাস থেকে ৩ মাসের মধ্যে এক্সেলে মোটামুটি এক্সপার্ট হতে পারেন। অবশ্য ঘুড়ি লার্নিং এর কোর্সগুলা এক্সেল শেখার জন্য খুব কার্যকরী। তাদের প্রতিটি লেসন আপনাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাইক্রোসফট এক্সেল আয়ত্ত্ব করতে সহায়তা করবে। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ার ব্যাপারেও ঘুড়ি লার্নিং এর এক্সপার্টরা বেশ সহায়ক। তাছাড়া ইন্টারনেটে মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার বহু রিসোর্স আছে, যা প্রতিনিয়ত আপনাকে আরও বেশি এডভান্স লেভেলে নিয়ে যাবে। 


    মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার ১০ টি সহজ টিপস


    এখন চলুন দেখে আসি কীভাবে আপনি মাইক্রোসফট এক্সেল সহজে শিখতে পারবেন তার গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস শেয়ার করি। সাধারণত মাইক্রোসফট এক্সেলের মতো সফটওয়্যারগুলো আয়ত্ত্ব করতে কার্যকরী টেকনিক খুব সহায়তা করে। যারা অভিজ্ঞ তারা সাধারণত এ টিপসগুলো অনুসরণ করেই আজ ক্যারিয়ারে ভালো করছে। তাহলে দেরি না করে চলুন সেই টিপসগুলো জেনে আসি। 


    ১. এক্সেলে ড্যাশবোর্ড সম্পর্কে ভালো ধারণা নিন 


    প্রথমত মাইক্রোসফট এক্সেলের যে ভার্সন আপনি ব্যবহার করছেন তার ইন্টারফেস সম্পর্কে ধারণা নিন। কীভাবে নতুন ফাইল তৈরি করবেন কিংবা টেম্পলেট কীভাবে ব্যবহার করবেন, ডাটা ইনপুট দিবেন কীভাবে, ফাইল সেইভ করবেন কীভাবে ইত্যাদি বিষয়। একই সাথে ফন্ট সাইজ বাড়ানো-কমানো, কালার করা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে প্রথম কয়েকদিন প্রাকটিস করুন। তাছাড়া মাইক্রোসফট এক্সেলের শর্টকার্ট কমান্ডগুলো আয়ত্ত্ব করে নিন। 


    ২. এমএস ওয়ার্ড জানুন এবং টাইপিং স্পিড বাড়ান 


    মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার মধ্যে আবার মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কেন শিখতে হবে? আসলে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড যাদের জানা আছে তাদের জন্য মাইক্রোসফট এক্সেলের বেসিক অনেক ইন্টারফেস বুঝতে সুবিধা হয়। তারা দ্রুত মাইক্রোসফট এক্সেল আয়ত্ত্ব করতে পারেন। সুতরাং মাইক্রোসফট এক্সেল শেখার আগে ওয়ার্ড সফটওয়্যারটা আয়ত্ত্ব করা ভালো। সেই সাথে টাইপিং স্পিড আপনার অফিসিয়াল কাজের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার কাজকে নির্ভুল করবে এবং দ্রুততার সাথে আপনি মাইক্রোসফট এক্সেলে কাজ করতে পারবেন। সুতরাং এমএস ওয়ার্ড শিখে নিন এবং টাইডিং স্পিড বৃদ্ধি করার জন্য ইংরেজি এবং বাংলা দুই ভাষাতেই কয়েক সপ্তাহ প্র্যাকটিস করুন। 


    ৩. মেনুগুলা আয়ত্ত্বে আনুন 


    মাইক্রোসফট এক্সেলের মেনুবারে যতোগুলো অপশন পাবেন তা আপনার কাজে প্রয়োগ করুন এবং কী পরিবর্তন হয় তা প্র্যাকটিস করে নিন। সাধারণত File, Home, Insert, Page Layout, Formulas, Data, Review, View, Help এ রকম গুরুত্বপূর্ণ কিছু মেনুর আন্ডারে আপনি আরও অনেক ধরণের ফরমেটিং অপশন পাবেন। সেগুলোর সাথে পরিচিত হোন এবং আয়ত্ত্ব করে ফেলুন। তাহলে আপনার মাইক্রোসফট এক্সেল বুঝতে সুবিধা হবে। সেজন্য অনলাইনে যেকোন টিউটোরিয়াল ফলো করতে পারেন। বিশেষ করে ঘুড়ি লার্নিং এর কোর্সগুলো দেখতে পারেন। 


    ৪. পেজ ডিজাইন ও ফরমেটিং শিখুন 


    মাইক্রোসফট এক্সেলে আপনি কীভাবে টেবিল তৈরি করবেন এবং তা কীভাবে ফরমেটিং করবেন তা শিখুন। আপনি নিজে টেবিল তৈরি করে তা বিভিন্ন কালারের মাধ্যমে সুন্দর করে ডিজাইন করুন এবং বোল্ড, ইটালিক ইত্যাদি ফরমেটে তা সুন্দর করে ডিজাইন করা শিখুন। একটি পারফেক্ট টেবিল যদি আপনি তৈরি করতে না পারেন তাহলে পরবর্তী কাজগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপানের সুযোগ আপনি অনেকাংশে হারাবেন। সুতরাং এখানে বেশ টাইম ব্যয় করুন ভালোভাবে আয়ত্ত্ব করার জন্য। 


    ৫. কলাম রো ইনসার্ট ডিলেটিং শিখুন 


    মাইক্রোসফট এক্সেলে কলাম এবং রো কীভাবে সাজাতে হয় আবার টেবিলের মধ্যে কীভাবে কলাম রো ইনসার্ট করতে হয় তা শিখে নিন। কলাম/রো ডিলেট করার প্রয়োজন হলে তা কীভাবে করবেন তাও শিখে ফেলুন। সাধারণত যেকোন রো বা কলামে কারসার রেখে রাইট ক্লিক করলে ইনসার্ট, ডিলিট, কাট-কপি ইত্যাদি অপশনগুলো পেয়ে যাবেন। এখান থেকে ইনসার্ট ডিলেটিং শিখে ফেলুন। 


    ৬. সিম্পল ম্যাথ কীভাবে ইম্পিলিমেন্ট করতে হয় শিখুন 


    এবার সাধারণ সূত্রের সাহায্যে কীভাবে ক্যালকুলেশন করতে হয় তা আয়ত্ত্ব করুন। আপনি সাধারণ ম্যাথ থেকে জটিল সব ইকুয়েশন খুব সহজে মাইক্রোসফট এক্সেলের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পারবেন। যোগ, বিয়োগ, গুণ ভাগসহ অটোসামের আরও ফর্মুলা কীভাব কাজ করে তা বেশি বেশি প্রাকটিস করুন। এগুলা আপনাকে মাইক্রোসফট এক্সেলে এডভান্স লেভেলে যেতে সহায়তা করবে। 


    ৭. অটোফিল আয়ত্ত্ব করুন 


    অটোফিল অপশন বেশ কার্যকরী একটি কমান্ড। এই অপশন আপনাকে একই ধরণের ডাটা একাধিক সেলে কপি করতে সহায়তা করে। জাস্ট ড্র্যাগের মাধ্যমে আপনি অটোফিল অপশনের সাহায্যে অনেকগুলা সেল ফিল করতে পারবেন। আপনার কাজকে সহজ এবং দ্রুত করার জন্য এটি খুবই কার্যকরী। আপনি values, series, and formulas সব ধরণের অপশনে অটোফিল ব্যবহার করতে পারবেন। সুতরাং অনেক কাজকে সহজ করতে অটোফিল শিখে নিন। 


    ৮. নাম্বার ফরমেট এবং চার্ট শিখুন 


    মাইক্রোসফট এক্সেলের একটি অসাধারণ ফিচার চার্ট তৈরি করা। আপনার হাজার হাজার ডাটাকে ভিজ্যুয়ালী প্রদর্শনের জন্য চার্ট অপশনটি বেশ কার্যকরী। আপনি ইনসার্ট অপশন থেকে যতো ধরণের চার্টের প্রয়োজন হয় তা পেয়ে যাবেন। আপনার প্রয়োজন অনুসারে আপনি ব্যবহার করবেন। এখন সেগুলো শিখে নিন। সেই সাথে নাম্বার ফরমেটিং বেশ কার্যকরী। বিভিন্ন সাইন বা কারেন্সি ইত্যাদি ফরমেটিং করতে হয় জানা প্রয়োজন হয়। সুতরাং নাম্বার ফরমেটিং শিখে নিন। 


    ৯. টেবিল তৈরি এবং ফরমেটিং শিখুন 


    যদিও টেবিল তৈরি মাইক্রোসফট এক্সেলের অন্যতম একটি কাজ। সুতরাং টেবিল কীভাবে ফরমেট করতে হয় এবং আপনার ডাটার ধরণ অনুসারে কীভাবে তা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হয় তা শিখে নিন। আপনার ক্রিয়েটিভিটির ব্যবহার করুন। দেখবেন মাইক্রোসফট এক্সেলের মাধ্যমেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে ক্লায়েন্টকে আরও বেশি খুশি করতে পারছেন। সর্বোপরি আপনি ইনকামের পাশাপাশি বোনাসও পাবেন বেশি বেশি। 


    ১০. কন্ডিশানাল ফরমেটিং শিখুন 


    বর্তমান সময়ে মাইক্রোসফট এক্সেল বেশ এগিয়ে গিয়েছে। স্প্রেডশিট তৈরি বা ড্যাশবোর্ড সবই এখন পাওয়ারফুল কাজের জন্য উপযুক্ত। আপনার ডাটার ধরণ অনুসারে ড্যাশবোর্ড তৈরি করা, বিশেষ করে কন্ডিশনাল ফরমেটিং তৈরি করা আপনার কাজকে অনেক সহজ করে দিবে। আপনি কন্ডিশনাল ফরমেটিং এ অনেক ধরণের অপশন পাবেন। আপনার প্রয়োজন অনুসারে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। আপনার শেখার সময় সেজন্য বেশিরভাগ কন্ডিশনাল ফরমেটিং আয়ত্ত্ব করুন। তাহলে আপনার শেখার পূরা প্রসেসটা আরও শক্তিশালী হবে। 


    অন্যান্য 


    আমি কিছু প্রয়োজনীয় ফাংশন বা ফরমেটিং নিয়ে উপরে কথা বলেছি। এর বাইরেও আরও অনেক কাজ আছে যা আপনাকে আয়ত্ত্ব করতে হবে। যেমন মেনুয়ালী ফাংশন প্রয়োগ করা, কলাম সাইজ রিসাইজ করা, টেক্সট অ্যালাইনমেন্ট, এক্সেল শিট প্রিন্ট করা, এক্সেল ডাটা প্রটেকশন, ড্রপডাউন লিস্ট তৈরি, ফ্রিজ পেইন নিয়ে কাজ করা ইত্যাদি বিষয় আপনি যতো আয়ত্ত করতে পারবেন ততই আপনি বড় বড় প্রজেক্টে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন। 


    সারাংশ 


    এভাবে যদি আপনি নিজে মাইক্রোসফট এক্সেল শিখতে পারেন তাহলে আপনার ক্যারিয়ার মাইক্রোসফট এক্সেলেও অনেক ভালো উন্নতি এনে দিতে পারবে। বাংলাদেশে বসে ফ্রিল্যান্সিং করেও আপনি স্মার্ট ইনকাম করতে পারবেন। তবে অবশ্যই একজন এক্সপার্ট প্রশিক্ষকের সহায়তা নিলে আপনি দ্রুত এগিয়ে যেতে পারবেন। আপনি ছোট-বড় বিষয়গুলো দ্রুত আয়ত্ত্ব করে ফেলতে পারবেন। আর এক্ষেত্রে মাসুদ কম্পিউটার বিডি সর্বদা পাশে পাবেন এবং আপনার ক্যারিয়ারকে এই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিল্ড করতে বেশ সহায়তা করতে মাসুদ কম্পিউটার বিডি সর্বদা প্রস্তুত। সবশেষে, কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে করতে পারেন। ধন্যবাদ। 

    Newer post Older post
    ads1

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    ডোমেইন হোস্টিং সার্ভিস এই লিংকে চাপ দিন

    ওয়েব ডিজাইন সার্ভিস এই লিংকে চাপ দিন

    গ্রাফিক্স ডিজাইন সার্ভিস এই লিংকে চাপ দিন

    ডোমেইন চেকার এই লিংকে চাপ দিন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ads3