ডিজিটাল মার্কেটিং কী? ফেসবুক মার্কেটিং কেন, কীভাবে করবেন?

    আপনি কি দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসার উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং বা ফেসবুক মার্কেটিং করতে চাচ্ছেন? ডিজিটাল মার্কেটিং বা ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমেও আপনার ব্যবসাকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। মাসুদ কম্পিউটার বিডি এই আর্টিকেলে আমরা  ডিজিটাল মার্কেটিং ও ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে আলোচনা করবো। সেই সাথে কীভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করবেন তাও তুলে ধরবো। 



    মার্কেটিং শব্দটির বিচরণ এক সময় শুধুমাত্র ব্যবসা-ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তন এবং যুগের চাহিদার উপর ভর করে মার্কেটিং এর বহুমুখী ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। এখন মার্কেটিং শুধুমাত্র ব্যবসা সেক্টরে নয় বরং মার্কেটিং হয়ে উঠেছে সকল সেক্টরের অন্যতম চাহিদা-বহুল একটি মাধ্যম। বর্তমান সময়ে চলছে প্রযুক্তির জয়যাত্রা। আর এই প্রযুক্তির জয়যাত্রার যুগে মার্কেটিং আমাদের সামনে হাজির হয়েছে নতুন আঙ্গিকে এবং ভিন্ন রূপে— ডিজিটাল মার্কেটিং হিসেবে। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং কি, কেন? ফেসবুক মার্কেটিং কি, কেন, কিভাবে করবেন জানতে পারবেন আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে। 

    ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে  কি বুঝায়? 

    একটি বিজনেসকে প্রচার, উন্নতি এবং ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে সকলের সামনে পরিচিত করার এক অন্যতম কৌশল হল ডিজিটাল মার্কেটিং। ইন্টারনেটকে  ব্যবহার করে স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক কাস্টমারকে বিজনেস এর দিকে আকৃষ্ট করে সেল বৃদ্ধির মাধ্যমে বিজনেসকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমকে বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং। 


    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব 

    একবাক্যে কখনোই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের গুরুত্বের কথা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। ডিজিটাল মার্কেটিং হল সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল পরিসেবা। কাঙ্ক্ষিত গ্রাহকদের অর্গানিক রিচ, সোশ্যাল মিডিয়া, এড ম্যানেজমেন্ট এবং ওয়েবসাইটের মতো মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে যেকোনো বিজনেসকে সফলতার উচ্চাসীন আসনে অধিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ডিজিটাল মার্কেটিং একটি বিজনেস তার লক্ষ্য  অর্জনের ক্ষেত্রে সাহায্য করে।  সেই সাথে একটি বিজনেস এর প্রচারণা কৌশলে পরিবর্তন এনে বিজনেসকে সফলতার স্বর্ণ-শিখরে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। 


     

    শুধুমাত্র ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর কোম্পানি এবং বৃহৎ থেকে বৃহত্তর কোম্পানি নিজেদের নিয়ে গেছে সফলতার উচ্চ আসনে। মূলত ডিজিটাল পরিসেবাকে ব্যবহার করে স্বল্প সময়ে বেশি সংখ্যক গ্রাহককে আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে কাজ করছে ডিজিটাল মার্কেটিং। 


    ফেসবুক মার্কেটিং কি?


     ফেসবুক বিশ্বের জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। প্রায় প্রতিদিন ২.৫ বিলিয়ন এক্সটিভ ইউজার দৈনন্দিন জীবনে সরব হয়ে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাই বিশাল সংখ্যক গ্রাহকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত পণ্য খোঁজার জন্য ভরসা করে এফ-কমার্স এর উপর। 

    প্রতিদিন ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী ফেসবুক ইউজাররা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে পেতে একটিভ হয় ফেসবুকে। তাই প্রায় ৬৫ ভাগ ফেসবুক ইউজাররা লোকাল বিজনেস পেইজ সপ্তাহে একদিন হলেও চেক করে। 

    তাই এই বিশাল সংখ্যক গ্রাহকদের আকর্ষণ করার বর্তমান সময়ে পণ্যের প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহ বেছে নিচ্ছে ফেসবুককে। ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি স্বল্প সময়ে আপনার টার্গেট অডিয়েন্সকে রিচ করতে পারবেন। সেই সাথে তাদেরকে ভিজিটর থেকে কাস্টমার হিসেবে-আপনি রূপান্তর করতে পারবেন। তাই কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ই-কমার্স কিংবা এফ-কমার্স ফেসবুককে কেন্দ্র করে পণ্যের প্রচারণা চালানোর কৌশলকে বলা হয় ফেসবুক মার্কেটিং। 

    ফেসবুক মার্কেটিং কাকে বলে 


    যেকোনো ব্র্যান্ড কিংবা বিজনেসের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পণ্যের প্রচারণা চালানোর কৌশলকে বলা হয় ফেসবুক মার্কেটিং। এই পদ্ধতিতে বিজনেসগুলোকে পণ্যের প্রচারণা বাড়াতে, বিজনেস উন্নতিতে, ফলোয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে, টার্গেট জেনারেট এবং লিড্স বৃদ্ধির মাধ্যমে পণ্য কেনা বেচার জন্য বিজনেস এর উন্নতির ক্ষেত্রে কাজ করে।

     ফেসবুক মার্কেটিং এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল—

    • অর্গানিক টেক্সট, ছবি কিংবা ভিডিও কন্টেন্ট অথবা পেইড ছবি, ছবি, ভিডিও কন্টেন্ট 
    • ফেসবুক স্টোরি বা রিলস 
    • ফেসবুক বিজ্ঞাপন 
    • ফেসবুক গ্রুপ 
    • কন্টেস্ট এবং গিভয়ে 
    • ফেসবুক মেসেঞ্জার। চ্যাট-বুট অথবা অটো রেসপন্স 
    • ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং।

     

    কিভাবে করবেন ফেসবুক মার্কেটিং 

    সময়ের সাথে সাথে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেসবুক মার্কেটিং। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে করবেন ফেসবুক মার্কেটিং—



    ১. আপনার গ্রাহকদের জানুন 

    কোন কিছু শুরু করার পূর্বে আপনার সবার আগে জানতে হবে আপনার আইডিয়াল কাস্টমার কারা এবং তারা কি খুঁজছে ফেসবুকের মধ্যে। আর এর উত্তর পাওয়ার পরই আপনাকে একটি মার্কেটিং এবং কন্টেন্ট স্ট্র্যাটেজি তৈরি করে নিতে হবে। 

    গ্রাহকদের আরও ভালোভাবে জানার স্বার্থে নিম্নোক্ত প্রশ্নের উত্তরগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। 

    • তাদের বয়স কত?
    • তারা কোথাও বসবাস করে?
    • তাদের কর্মক্ষেত্রে তারা কি ধরণের দায়িত্বে রয়েছে?
    • তারা পণ্য নিয়ে কি ধরেনর সমস্যা মোকাবেলা করছে এবং সমাধান কি?
    • কখন এবং কিভাবে এবং কেন তারা ব্যবহার করছে ফেসবুক?

     

    এছাড়াও আপনি চাইলে গ্রাহকদের আরও বিস্তর-ভাবে জানার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো উত্তর খুঁজে বের করতে পারেন—

    • শিক্ষাগত যোগ্যতা 
    • রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস 
    • লোকেশন 
    • ইন্টারেস্ট এবং হবি 
    • ভাষা-গত যোগ্যতা 
    • ফেসবুক ব্যবহারের সময়সীমা 
    • কেনাকাটার অভিজ্ঞতা 

     

    এই সকল প্রশ্ন থেকে প্রাপ্ত উত্তর আপনার বিজনেস সাজিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। তাই গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য তাদের সম্পর্কে জানুন এবং সে অনুযায়ী ফেসবুক মার্কেটিংয়ের পরিকল্পনা সেট করুন। 


    ১. আপনার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন 

     

    আপনার কেন ফলোয়ার প্রয়োজন? তাদের কি চাহিদা রয়েছে আপনার কাছ থেকে? এক্ষেত্রে বেশিরভাগ কোম্পানির উত্তর হবে কিছু কেনার জন্য। 

    তবে সবসময় টাকা আয় করা ফেসবুক পেইজের উদ্দেশ্য থাকে না বরং তাদের আরও কিছু উদ্দেশ্য থাকে। তা হল—

    • সচেতনতা বৃদ্ধি করা 
    • কাস্টমার সার্ভিস উন্নত করা 
    • সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করা
    • ট্রাফিক বৃদ্ধি করা 
    •  


    আপনার পুরোপুরি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির উপর নির্ভর করে আপনার ফেসবুক মার্কেটিং এপ্লাই করতে হবে। তাই এই ধরণের বিষয়সমূহ কিভাবে ম্যাজিকের মতো কাজ করবে তা আপনি কিছুদিনের মধ্যে নিজেই বুঝতে পারবেন। 


    ২. আপনার কন্টেন্ট স্ট্র্যাটেজি পরিকল্পনা করুন  

    জটিল কিছু খুঁজে বের করার প্রয়োজন নেই। বরং আপনার শুধুমাত্র দুটি প্রশ্নের উত্তর জানা আবশ্যক। আর তা হল 


    • আপনি কি পোস্ট করবেন?
    • আপনি কখন পোস্ট করবেন?

     


    ক. আপনি কি পোস্ট করবেন 


    আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সম্পর্কে জানার পর তাদের ভালোলাগাগুলো মাপকাঠি করে নিন। তা আপনি আপনার পোস্টের মধ্যে সাজিয়ে তুলন। একটি আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আপনার গ্রাহকরা বার বার শুধুমাত্র আপনার পেইজে ভিজিট করবে। তাই তথ্যবহুল কন্টেন্ট উপস্থাপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করুন। আপনি এসব দুটি মাধ্যমে করতে পারেন। 


    থার্ড রুলঃ পোস্টার বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য এই থার্ড রুল এপ্লাই করে পারেন। মূলত ইন্ডিরেক্টলি প্রোমোশনের ক্ষেত্রে কার্যকর একটি রুল হল এটি। 

    ৮০/২০ রুলঃ এই  রুলের মাধ্যমে ৮০ ভাগ কোন ফানি কিংবা শিক্ষা-বহুল কন্টেন্ট এর সাথে ২০ ভাগ প্রমোশনাল অফার রাখতে পারেন। এতে আপনার কন্টেন্ট যেমন রিচ পাবে গ্রাহকদের জ্ঞানের পাশাপাশি পণ্য কেনার আগ্রহ বাড়বে। 

     

    খ. কখন পোস্ট করবেন 

    একটি পরিচত রিসার্চ অনুসারে, ফেসবুকে মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার কোন পোস্ট করার উত্তম সময় হল সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত। এছাড়াও আপনি আপনার গ্রাহকদের একটিভিটির উপর নির্ভর করে তাদের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর পর পোস্ট করতে পারেন। 


     পেইজকে সাজিয়ে তুলন 

    ফেইসবুক মার্কেটিং করতে হলে আপনাকে সবার আগে সাজিয়ে তুলতে হবে আপনার বিজনেস পেইজকে। বিজনেস পেইজকে সাজিয়ে তোলার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়ে খেয়াল রাখুন—

    • একটি প্রোফাইল ফটো যুক্ত করুন
    • Book Now নামক বাটন যুক্ত করুন 
    • প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন ঠিকানা ,ওয়েবসাইট, মোবাইল নম্বর এড করুন
    • পিন পোস্টে আপনার রিসেন্ট  অফার, বিজনেস সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যাদি যুক্ত করুন
    • বিজনেস এ একটি ট্যাগ-লাইন যুক্ত করুন
    • কোন ফিজিক্যাল শপ থাকলে অবশ্যই সে নাম যুক্ত করে দিবেন

     

    অন্যান্য ফেসবুক টুলসগুলো ব্যবহার করুন 


    ফেসবুক মার্কেটিংয়ের জন্য ফেসবুকের অন্যান্য টুলসগুলো ব্যবহার করা প্রয়োজন। তা হল—

    ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করুনঃ ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে একটি বিশাল মানুষকে টার্গেট করে গ্রুপ তৈরির করা যায়। ফলে সেক্ষেত্রে একটি বিশাল সংখ্যক অডিয়েন্স ক্রিয়েট করা যায়। 


    হট-সুইটে ইনবক্সের মাধ্যমে এঙ্গেইজমেন্ট বৃদ্ধি করুনঃ এই এপ্লিকেশনটি ইনবক্সের ম্যাসেজ এবং কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজে দেয়। দ্রুত রিপ্লাই দেওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে একটি আস্থা-ভাজন সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে কাজ করে এই এপ্লিকেশনটি। 

    লোকাল সেলের জন্য ফেসবুক মার্কেট-প্লেস ব্যবহার করুনঃ আপনি হয়তো মার্কেটিংকে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় একটি মাধ্যম ভাবছেন কিন্তু এটি বিজনেস সেলস চ্যানেলের জন্য বেশ মূল্যবান। 

    ২০২৩ সালে ফেসবুক মার্কেট-প্লেসের বিজ্ঞাপন ৪/৫ বিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে বলে তথ্য পাওয়া যায়। তাই ফ্রিতে আপনার বিজনেসকে পরিচালনা করতে মার্কেটিং করতে পারেন এক্ষেত্রে। 


    মেটা পিক্সেল ইন্সটল করুন 


    আপনার ওয়েবসাইটে মেটা পিক্সেল হল এক ধরণের কোড। যার মাধ্যমে আপনি আপনার গ্রাহকদের একই সাথে টার্গেট, টেস্টিং ,ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম এডের মাধ্যমে এনালাইসিস করতে পারবেন। 

     

    মেটাপলিক্সেল ইন্সটল করার জন্য অনুসরণ করুন নিম্নোক্ত ধাপসমূহ—

    • লগ ইন করুন  Facebook Events Manager.তারপর লেফট মেনুতে গিয়ে ডাটা সোর্স কানেক্ট করুন। 
    • সেখান থেকে ডাটা সোর্সের জন্য ক্লিক করুন Web পরবর্তীতে তা কানেক্ট করুন। 
    • নামকরণ করুন এবং সেই সাথে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করুন। আপনি কি ধরণের ওয়েবসাইট চালাচ্ছেন তার জন্য one-click যাচাইকরণ বাটন যুক্ত করুন। যদি এক্ষেত্রে কাজ না হয় তাহলে কোড ম্যানোয়েলি যুক্ত করুন। 
    • ট্র্যাক অপশন যুক্ত করুন। পরবর্তীতে আপনার পিক্সেল অপশন থেকে এড ইভেন্ট যুক্ত করুন। 

    আপনার দেওয়া ওয়েবসাইট লিংক থেকে ওয়েবসাইট ওপেন করে নি না.সেখান থেকে আপনি ট্রাকটি এবং ইভেন্ট অপশনটি আপনার পিক্সেল থেকে দেখতে পাবে। সেখানে কোন ধরণের কোডিং এর প্রয়োজন নেই। পরবর্তীতে সেখান থেকে কন্ট্রাক্ট,সার্চ এবং অন্যান্য বাটন এড করুন। 

     

    কেন ব্যবহার করবেন ফেসবুক বিজ্ঞাপন 

    ফেসবুক বিজ্ঞাপন আপনাকে একই সাথে ট্রাফিক জেনারেট করতে এবং সেল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। ফেসবুক এড মূলত সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আপনার বিজনেস পেইজে একটি বড় ধরণের পটাশিয়াল গ্রাহক খুঁজে দিতে-সাহায্য করে। ২০২২ এর তথ্য মতে এই সংখ্যাটা ২.৫ বিলিয়নের কাছাকাছি। 


    তাই আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচার করতে চান তাহলে মার্কেটিং শুরু করার জন্য ফেসবুক সবচেয়ে উত্তম একটি স্থান। তাই বিজ্ঞাপন প্রচার করে শুরু করুন ফেসবুক মার্কেটিং। 



    কেন করবেন ডিজিটাল মার্কেটিং 

    ব্যবসা ক্ষেত্রে এক নতুনত্বের সংযোজন নিয়ে এসেছে ডিজিটাল মার্কেটিং। বেশ কিছুদিন পূর্বেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিজেদের পণ্যসমূহ গ্রাহকদের কছে যেয়ে যেয়ে প্রচার করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সংযোজন এর ফলে ব্যবসা-ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 


    এখন আর প্রতিষ্ঠানসমূহকে গ্রাহকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পণ্যের প্রচারণা করতে হয় না। বরং স্বল্প খরচে কম সময়ে তাদের টার্গেট গ্রাহকদের কেন্দ্র করে পণ্যের প্রচারণা চালাতে সক্ষম হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে। এই পদ্ধতির মধ্যে একজন বিক্রেতা যেমন তার টার্গেট কাস্টমার পাচ্ছে ঠিক তেমনি একজন ক্রেতাও নিজে যাচাই বাছাই করে তার প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছে। অর্থাৎ এই পদ্ধতির মাধ্যমে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়পক্ষ বেশ লাভবান হচ্ছে। এখন চলুন জেনে নেই ডিজিটাল মার্কেটিং করার কিছু বিশেষ কারণ—


    ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি খুব সহজে আপনার টার্গেট কাস্টমার নির্ধারণ করে শুধুমাত্র তাদের টার্গেট করে পণ্যের প্রচার করতে পারবেন। 

    টার্গেট কাস্টমারকে রিচ করার জন্য আপনি আন-লিমিটেড এড কিংবা বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবেন। 

    খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনি অধিক সংখ্যক কাস্টমারকে রিচ করতে পারবেন। 

    খুব সহজে গ্রাহকদের সাথে ইন্টারেক্ট করার সুযোগ হবে, যা আপনার বিজনেসের জন্য বেশ প্রফিটেবল হবে। 

    এই মাধ্যমে রয়েছে ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবস্থা যেখানে একজন গ্রাহক যেমন কাস্টমারদের মতামত জানতে পারবে ঠিক তেমনিভাবে একজন কাস্টমার প্রোডাক্ট কোয়ালিটি এবং সার্ভিসের উপর নির্ভর করে তার পণ্যের বিবরণ উপস্থাপন করার সুযোগ পাবে। 

     

    ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ 


    ডিজিটাল মার্কেটিংকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

    • ১. অনলাইন মার্কেটিং 
    • ২. অফলাইন মার্কেটিং 


    এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-

    • অনলাইন মার্কেটিং  


    ঘরে বসে ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে পণ্যের প্রচারণা চালানোর কৌশলকে বলা হয় অনলাইন মার্কেটিং। তবে অনলাইন মার্কেটিং বেশ কিছু মাধ্যম নিয়ে কাজ পরিচালনা করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক অনলাইন মার্কেটিংয়ের মাধ্যম সম্পর্কে। 


    ১. এসইও (SE0)

    সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সংক্ষিপ্ত রূপ হল এসইও। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বৃদ্ধি করার এক অর্গানিক মেথড হিসেবে পরিচিত এসইও। মূলত কী-ওয়ার্ড প্লেসমেন্টের কাজ করে এসইও। একজন গ্রাহক যখন তার চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কী-ওয়ার্ড সার্চ করবে ঠিক তেমনি তখন তার প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট চলে আসে গুগলের সার্চ লিস্টের শীর্ষস্থানে। কখনো কি ভেবেছেন এতো এতো ওয়েবসাইট থাকার কারণে কেন শুধুমাত্র সিলেক্টেড কিছু ওয়েবসাইট দেখতে পায় একজন গ্রাহক?



    মূলত কী-ওয়ার্ড প্লেসমেন্টের ফলে রিলেভেন্ট আর্টিকেল চলে আসে একজন গ্রাহকের সার্চ লিস্টের শীর্ষে। একজন গ্রাহক ক্লিক করা মাত্রই যেখানে তার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য জানতে পারবে রিলেভেন্ট আর্টিকেল থেকে। ব্যবসা সেক্টরে এক আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এসইও। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানসমূহ চলে আসে গুগলের সার্চ লিস্টের টপ পজিশনে। 


    ২. এসইএম (SEM)


    সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ের সংক্ষিপ্ত রূপ হল এসইএম। এটি এক ধরণের পেইড মেথড। এই মেথডের আলোকে একজন গ্রাহক তার বিজনেস এর যেকোনো বিজ্ঞাপন নির্দিষ্ট মূল্যে তার গ্রাহকদের দেখানোর সুযোগ পায়। স্বল্প সময়ের টার্গেট জেনারেট করে আপনার গ্রাহকদের পণ্য কেনার ব্যাপারে আকৃষ্ট করে তোলার এক অন্যতম মাধ্যম হল এটি। 


    ৩. পে পার ক্লিক (PPC)

     পে পার ক্লিকের পূর্ণ রূপ হল পিপিসি। এটি এক ধরনের মডেল। আপনি যখন কোন ওয়েবসাইটে কিংবা কোন ভিডিওর মাধ্যমে আপনার বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন তখন কোন গ্রাহক আপনার সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিকের মাধ্যমে আপনার ল্যান্ডিং পেইজ আসবে। একজন গ্রাহককে আপনার পেইজে আকৃষ্ট করে তোলার ক্ষেত্রে এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সার্চ ইঞ্জিনকে প্রদান করতে হয়। 

     


    ৪. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)


     

    অর্গানিক মেথডে ট্রাফিক জ্যানারেট করার এক অন্যতম কৌশলের নাম হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের মাধ্যম পণ্যের প্রচারণা চালানোর কৌশলকে বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। পেইড কিংবা অর্গানিক উপায়ের পণ্যের প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহ। 


    ৫. কন্টেন্ট মার্কেটিং 


    কথায় আছে content is king. ভিডিও, অডিও কিংবা আর্টিকেলের মাধ্যমে পণ্যসমূহ সম্পর্কে আকৃষ্ট করে তোলার মাধ্যম হল কন্টেন্ট মার্কেটিং। একজন গ্রাহক জেনে, বুঝে, যাচাই করার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাঙ্ক্ষিত পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে কন্টেন্ট মার্কেটিং। কেউ কেউ টিকটিক কিংবা ইউটিউব মার্কেটিং করে পণ্যের প্রচারণা চালাচ্ছে আবার কেউ কেউ পডকাস্ট কিংবা অডিও বুকের মাধ্যমে চালাচ্ছে পণ্যের প্রচারণা শুধুমাত্র কন্টেন্ট মার্কেটিং এর সাহায্যে। । 


     ৬. ইমেইল মার্কেটিং 


     


    ইমেইলের মাধ্যমে পণ্যের প্রচারণা চালানোর কৌশলকে বলা ইমেইল মার্কেটিং। আপনার নির্দিষ্ট টার্গেট অডিয়েনসের মাধ্যমে আপনার পণ্যসমূহের পর্যাপ্ত তথ্যসমূহ সঠিকভাবে উপস্থাপন করার এক অন্যতম মাধ্যম হল ইমেইল মার্কেটিং। 


     


    ৭. এফিলিয়েট মার্কেটিং 


     


    কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোন পেইজের প্রোডাক্ট-কন্টেন্ট উপস্থাপন করে সেই বিক্রি করে কমিশন অর্জন করার এক অন্যতম মাধ্যম হল এফিলিয়েট মার্কেটিং। 


     


    অফলাইন মার্কেটিং 


     


    কোন গ্রাহককে পণ্য কেনার জন্য পণ্যের প্রচারণা চালানোর কৌশল হল অফলাইন মার্কেটিং। অফলাইন মার্কেটিং পণ্যের প্রচারণা চালানোর জন্য বেশ কিছু মাধ্যমে অনুসরণ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সকল মাধ্যম সম্পর্কে। 


     


    ১. লিফলেট মার্কেটিং 


     


    কোন পণ্যের বিবরণ লিফলেটে ছাপিয়ে সে পণ্যসমূহ গ্রাহকদের কাছে গিয়ে প্রচারণা চালানোর কৌশলকে বলা হয় লিফলেট মার্কেটিং। 


     


    ২. বিলবোর্ড মার্কেটিং 


     


    বিলবোর্ডের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্যের প্রচারণা চালানোর কৌশলকে বলা হয় বিলবোর্ড মার্কেটিং। 


     


    ৩. এসএমএস মার্কেটিং 


     


    এসএমএসের মাধ্যমে পণ্যের বিৱৰণ গ্রাহকদের কাছে উপস্থাপনের মাধ্যমকে বলা হয় এসএমএস মার্কেটিং। 


     


    ৪. মিডিয়া এডভার্টাইজিং 


     


    কোন বিজনেস তাদের পণ্য সম্পর্কে বিজ্ঞাপন দিয়ে সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে তোলার অন্যতম মাধ্যমকে বলা হয় মিডিয়া এডভার্টাইজিং। 


     

     


    শেষকথা


     


    ফেসবুক মার্কেটিংকে ব্যবহার করে বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ বিজনেস নিজেদের সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। তাই আপনি যদি স্বাধীনভাবে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনার বিজনেস পরিচালনা করতে চান তাহলে ফেসবুক মার্কেটিং হতে পারে আপনার সাফল্যের অন্যতম সিঁড়ি। ফেসবুক বা ডিজিটাল মার্কেটিং জানতে মাসুদ কম্পিউটার বিডি এর ব্লগ ভিজিট করুন নিয়মিত নিজেকে আরও বেশি উন্নত করতে পারবেন। 

    Older post
    ads1

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    ডোমেইন হোস্টিং সার্ভিস এই লিংকে চাপ দিন

    ওয়েব ডিজাইন সার্ভিস এই লিংকে চাপ দিন

    গ্রাফিক্স ডিজাইন সার্ভিস এই লিংকে চাপ দিন

    ডোমেইন চেকার এই লিংকে চাপ দিন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ads3